শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের শুরু করা লড়াই মৌলিক সংস্কারের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ করে জনগণের অধিকার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
শেরে বাংলার ৬৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের দেওয়া এক বাণীতে এই অঙ্গীকার করা হয়। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাণীতে নাহিদ ইসলাম উল্লেখ করেন, ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে শেরে বাংলা ঘোষণা দিয়েছিলেন, নির্বাচিত হলে তিনি জমিদারি প্রথা চিরতরে উচ্ছেদ করবেন। এই ঘোষণায় আতঙ্কিত হয়ে বাংলাদেশ ও কলকাতার জমিদাররা তার পরাজয়ের জন্য লাখ লাখ টাকা ব্যয় করলেও সফল হতে পারেনি। কৃষকরা তাদের আস্থার প্রতীক হিসেবে ফজলুল হককে বিজয়ী করেছিলেন।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ১৯৪০ সালের ২২ থেকে ২৪ মার্চ লাহোরের ইকবাল পার্কে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের সম্মেলনে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন। প্রস্তাবে তিনি বলেন, তৎকালীন হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার বাস্তবতায় হিন্দু-মুসলিমের একসঙ্গে বসবাস সম্ভব নয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি এবং বাংলা ও আসাম নিয়ে আরেকটি স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা তিনি উল্লেখ করেন।
বাণীতে আরও উল্লেখ করা হয়, পূর্ব বাংলার কৃষক ও প্রজাদের মর্যাদাপূর্ণ ভবিষ্যৎ ওই দুটি ঘটনার মাধ্যমে রচিত হয়। পুরো উপনিবেশিক যুগ এবং তার পূর্বেও পূর্ব বাংলা ছিল অবহেলিত জনপদ। ভারতের খাদ্য চাহিদার বড় অংশ সরবরাহ করা সত্ত্বেও এই অঞ্চলের মানুষ মানবিক মর্যাদার থেকে বঞ্চিত ছিল। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এই জনগোষ্ঠীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় অন্যতম ভূমিকা রাখেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলার মানুষের কাছে তিনি ‘হক সাহেব’ এবং ভারতের অন্য অঞ্চলের মানুষের কাছে ‘বঙ্গের বাঘ’ নামে পরিচিত ছিলেন। এমন বিরল গুণের নেতা পাওয়া একটি জাতির জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। তিনি বলেন, এ দেশের কৃষক-প্রজার রাজনৈতিক বন্ধু, লাহোর প্রস্তাবের উত্থাপনকারী এবং অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মৃত্যু দিবস আজ।
বাণীতে আরও বলা হয়, জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ ও স্বাধীন ভূখণ্ড প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলার কৃষক-প্রজা এবং মজলুম জনতার অধিকারের যে সংগ্রাম শেরে বাংলা শুরু করেছিলেন, তা মৌলিক সংস্কারের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ করে জনগণের অধিকার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আজকের দিনে তাঁদের অঙ্গীকার। শেরে বাংলার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।