বিশ্বের রাজনীতি কখনোই সহজ ছিল না। আর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মত দীর্ঘদিনের সংকট নিয়ে যখন আলোচনার প্রসঙ্গ আসে, তখন প্রতিটি সিদ্ধান্ত অত্যন্ত স্পর্শকাতর হয়ে দাঁড়ায়। সম্প্রতি এমনই এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার খবর সামনে এসেছে।
সূত্র বলছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে টেলিফোনে কথা বলেন। সেই আলোচনায় নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে ট্রাম্পকে সতর্ক করেন যে, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানির আনা যেকোনো প্রস্তাবের ব্যাপারে যেন খুব সতর্ক থাকেন।
নেতানিয়াহু নাকি ট্রাম্পকে বলেছিলেন, হামাসের পক্ষ থেকে কাতার “বিভিন্ন এবং অদ্ভুত প্রস্তাব” দিতে পারে, যা মূলত প্রতারণার অংশ। নেতানিয়াহুর ভাষায়, “হামাসের লক্ষ্য কখনোই সব বন্দিদের মুক্তি নয়। তারা ধোঁকা দিচ্ছে।” তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, “হামাসকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করতে হবে। যদি হামাস সীমান্তে থেকে যায়, তাহলে সেটা হবে আরেকটি ৭ই অক্টোবরের দুঃস্বপ্নের আমন্ত্রণ। এটা ইসরায়েলি জনগণ কখনোই মেনে নেবে না।”
যদিও কাতারের প্রধানমন্ত্রী গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফরে গিয়েছিলেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সাথে বৈঠক করেন, তবে হোয়াইট হাউস বা কাতার কেউই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে সরাসরি বৈঠকের কথা প্রকাশ করেনি।
আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণে, নেতানিয়াহুর এই অবস্থান একেবারে অপ্রত্যাশিত নয়। ইসরায়েলের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনি বরাবরই কঠোর সিদ্ধান্তের পক্ষে ছিলেন। বিশেষ করে ৭ই অক্টোবরের ভয়াবহ হামলার পর, যেখানে শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল এবং বহু মানুষ বন্দি হয়েছিল, সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনো টাটকা।
ট্রাম্পও পরে নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন যে, তিনি এবং নেতানিয়াহু “সব বিষয়ে একই পক্ষে” আছেন। তবে গাজা, হামাস বা বন্দিমুক্তি বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
এদিকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, কিছু ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে কাতার নাকি মিশরের একটি নতুন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে হামাসকে উৎসাহ দিয়েছে। যদিও একটি নিরপেক্ষ আরব সূত্র বলেছে, এই ধরনের খবর “উদ্ভাবিত” এবং এর উদ্দেশ্য মূলত বর্তমান আলোচনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা।
সত্যি বলতে, বর্তমান পরিস্থিতি জটিল এবং সংবেদনশীল। কাতার, হামাস, মিশর এবং ইসরায়েল — প্রত্যেকেই নিজেদের স্বার্থ নিয়ে এগোচ্ছে। তবে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে, বন্দিদের মুক্তি এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাই হওয়া উচিত সবার অগ্রাধিকার।